-
রক্তদান : কেন
-
রক্তদাতা : কে
-
রক্তদান : কীভাবে
রক্তদানে আপনার শরীরের কোনো ক্ষতি হবে না। ছেলেদের শরীরে ওজনের কেজিপ্রতি ৭৬ মিলিলিটার এবং মেয়েদের শরীরে ওজনের কেজিপ্রতি ৬৬ মিলিলিটার রক্ত থাকে। সবারই কেজিপ্রতি ৫০ মিলিলিটার রক্ত সংবহনের কাজে লাগে, বাকিটা উদ্বৃত্ত। ছেলেদের ওজনের কেজিপ্রতি ২৬ মিলিলিটার ও মেয়েদের ওজনের কেজিপ্রতি ১৬ মিলিলিটার রক্ত উদ্বৃত্ত। ফলে ৫০ কেজি ওজনের একটি ছেলের শরীরে উদ্বৃত্ত রক্তের পরিমাণ 50x26=1300 মিলি এবং একই ওজনের একটি মেয়ের শরীরে উদ্বৃত্ত রক্তের পরিমাণ 50x16=800 মিলি। স্বেচ্ছা রক্তদানে একজন দাতার কাছ থেকে ৩৫০ থেকে ৪০০ মিলিলিটার রক্ত সংগ্রহ করা হয় যা তার শরীরের উদ্বৃত্ত রক্তের অর্ধেকেরও কম। ফলে রক্তদানে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার কোনো আশংকাই নেই।
ধর্মীয় দিক থেকে অত্যন্ত পুণ্যের
রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকে অত্যন্ত পুণ্য বা সওয়াবের কাজ। একজন মানুষের জীবন রক্ষা করা সমগ্র মানবজাতির জীবন রক্ষা করার মতো মহান কাজ (সূরা মায়েদা : ৩২)।
স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারি
নানান গবেষণার ফলে এটা এখন প্রমাণিত যে, রক্ত দেয়া স্বাস্থের জন্যে উপকারি শুধু নয়, রক্ত দিলে একজন মানুষ মুক্ত থাকতে পারেন বেশ কয়েকটি মারাত্মক রোগের ঝুঁকি থেকে:
- হৃদরোগ ও হার্ট এটাকের ঝুঁকি কমে : সিএনএন পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, রক্তে যদি লৌহের পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে কোলেস্টেরলের অক্সিডেশনের পরিমাণ বেড়ে যায়, ধমনী ক্ষতিগ্রস্থ হয়, ফলাফল হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি। নিয়মিত রক্ত দিলে দেহে এই লৌহের পরিমাণ কমে যা হৃদরোগের ঝুঁকিকেও কমিয়ে দেয় কার্যকরীভাবে।
- ফ্লোরিডা ব্লাড সার্ভিসের এক জরিপে দেখা গেছে, যারা নিয়মিত রক্ত দেন, তাদের হার্ট এটাকের ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে ৮৮ ভাগ কম এবং স্ট্রোকসহ অন্যান্য মারাত্মক হৃদরোগের ঝুঁকি ৩৩ ভাগ কম।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে : মিলার-কিস্টোন ব্লাড সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত রক্ত দিলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। বিশেষ করে ফুসফুস, লিভার, কোলন, পাকস্থলী ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্ষেত্রে অনেক কম বলে দেখা গেছে।
- প্রাণবন্ততা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি : রক্তদান করার সাথে সাথে আমাদের শরীরের মধ্যে অবস্থিত বোন ম্যারো নতুন কণিকা তৈরির জন্যে উদ্দীপ্ত হয়। দান করার মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দেহে রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায়, আর লোহিত কণিকার ঘাটতি পূরণ হতে সময় লাগে ৪ থেকে ৮ সপ্তাহ। আর এই পুরো প্রক্রিয়া আসলে শরীরের সার্বিক সুস্থতা, প্রাণবন্ততা আর কর্মক্ষমতাকেই বাড়িয়ে দেয়।
- নিজের সুস্থতা যাচাই : রক্ত দিতে এসে একজন রক্তদাতা তার সার্বিক সুস্থতাকে যাচাই করে নিতে পারেন। ফলে প্রতি ৪ মাসে ১ বার করে বছরে ৩ বার হয়ে যাচ্ছে তার ব্লাড প্রেশার, পালস লেভেল থেকে শুরু করে ৫টি রক্তরোগের স্ক্রিনিং যা তাকে আশ্বস্ত করে তার সুস্থতা সম্পর্কে।
No comments:
Post a Comment